অবঘর্ষ কথাটির অর্থ ‘ঘর্ষণজনিত ক্ষয়’। সাধারণভাবে বলা যায়, নদী, হিমবাহ, বায়ুপ্রবাহ প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তির দ্বারা পরিবাহিত শিলাখণ্ডের সঙ্গে সংঘর্ষে বা ঘর্ষণে যখন ভূ-পূষ্ঠের শিলাস্তর ক্ষয়প্রাপ্ত হয়, তাকে তখন বলে অবঘর্ষ। যেমন—পার্বত্য প্রবাহে নদী-বাহিত পাথরগুলির সঙ্গে নদীখাতের ঘর্ষণের ফলে নদীখাত ক্ষয়ে যায় এবং নদীখাতে ছােট-বড় নানা আকৃতির গর্ত বা মন্থকূপের সৃষ্টি হয়। নদীর এই ধরনের ক্ষয়কার্যকে বলে অবঘর্ষ। আবার, হিমবাহের ক্ষেত্রে দেখা যায়, হিমবাহের সঙ্গে যেসব পাথর আটকে থাকে সেগুলির সঙ্গে হিমবাহ-উপত্যকা বা পর্বতগাত্রের সংঘর্ষের ফলে উপত্যকা ক্রমশ ক্ষয়প্রাপ্ত ও মসৃণ হয়। একেও বলে অবঘর্ষ। এছাড়া, মরু অঞ্চলে প্রবলবেগে প্রবাহিত বায়ুর মধ্যে ছােট ছােট পাথরখণ্ড এবং নানা আকার ও আয়তনের শক্ত কোয়ার্টজ কণা বা বালি থাকে। ঐ বায়ুর সঙ্গে যখন মরু অঞ্চলের শিলাস্তরের ঘর্ষণ লাগে, তখন শিলাস্তর তাড়াতাড়ি ক্ষয়ে যায় এবং ঘর্ষণের জন্য শিলাস্তরের গায়ে কোথাও আঁচড় কাটার মতাে দাগ, কোথাও মৌচাকের কুঠুরির মতাে অসংখ্য ছিদ্র হয়। এই ধরনের ক্ষয়কেও অবঘর্ষ বলে।